মানবদেহে প্রধানত কলা ৪ প্রকার। যথা:-
১. আবরণী কলা
২. যোজক কলা
৩. পেশি কলা
৪. স্নায়ু কলা
আবরণী কলার বৈশিষ্ট্য
- এটি অন্তঃত্বক ও বহিঃত্বক গঠন করে
- এটি একটি ঝিল্লির উপর অবস্থিত, এ ঝিল্লিকে বেসমেন্ট মেমব্রেন বলে
- এটি ভ্রুণীয় তিনটি স্তর থেকেই তৈরী হয়
- এ কলায় আন্তঃকোষীয় পদার্থ খুব কম
- এতে সরাসরি রক্ত সরবরাহ থাকে না। এটি এর সাথে সংশ্লিষ্ট যোজক কলা থেকে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় পুষ্টি সংগ্রহ করে
- এতে সংবেদী স্নায়ুপ্রান্ত থাকলেও মোটর / সঞ্চালক স্নায়ু সংযোগ থাকে না।
উদাহরণ
- আমাদের ত্বকের বহিরাবরণ আবরণী কলা দ্বারা গঠিত
- শ্বসনতন্ত্র বা পরিপাকতন্ত্রসহ সকল অভ্যন্তরীণ আবরণও আবরণী কলা দ্বারা গঠিত
যোজক কলার বৈশিষ্ট
- আমাদের দেহের গঠন ও সুরক্ষা যোজক কলার কাজ
- কোষ, তন্তু ও আন্তঃকোষীয় পদার্থ নিয়ে গঠিত
- এটি মেসেনকাইম থেকে উৎপন্ন
- আন্তঃকোষীয় পদার্থ অনেক বেশি
- এতে রক্ত ও স্নায়ু সরবরাহ বিদ্যমান
- বিভিন্ন বিপাকীয় পদার্থ ও পুষ্টি স্থানান্তরের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে
উদাহরণ
- রক্ত
- অস্থি,তরুণাস্থি, লিগামেন্ট, টেন্ডন ইত্যাদি যোজক কলার অন্তর্গত
পেশি কলা
পেশি কলা ৩ ধরনের হতে পারে। যেমন:-
১. ঐচ্ছিক পেশি
২. অনৈচ্ছিক পেশি
৩. হৃদপেশি
ঐচ্ছিক পেশি:
- পেশিকোষ লম্বা সিলিন্ডারের ন্যায়
- বহু নিউক্লিয়াসবিশিষ্ট যা কোষের পরিধির দিকে অবস্থিত
- কোষে কোন শাখা নেই
অনৈচ্ছিক পেশি:
- মাকু আকৃতির কোষবিশিষ্ট
- কোষে একটি নিউক্লিয়াস থাকে যা কোষের কেন্দ্রে অবস্থিত
- এতেও কোন শাখা থাকে না
- রক্তনালী এবং দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গ; যেমন- পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদান্ত্র ইত্যাদিতে এ পেশি পাওয়া যায়
হৃদ পেশি:
- এটি এক প্রকার বিশেষ ঐচ্ছিক পেশি
- কোষে একটি নিউক্লিয়াস থাকে, কেন্দ্রের দিকে
- কোষে শাখা দেখা যায়
- ইন্টারক্যালেটেড ডিস্ক দেখা যায়
- এটি কার্যকারিতার দিক দিয়ে অনৈচ্ছিক পেশি; অর্থাৎ, নিজ ইচ্ছায় এর নড়ন নিয়ন্ত্রণ করা যায় না
- শুধু হৃদপিন্ডে হৃদপেশি দেখা যায়
স্নায়ু কলা
স্নায়ুকলা যে সকল উপাদান নিয়ে গঠিত তা হল-
১. নিউরিন
এটি স্নায়ুকলার গঠনগত ও কার্যকর একক।
২. সাহায্যকারী কোষসমূহ (নিউরোগ্লিয়া)
- অ্যাসস্ট্রোসাইট
- ওলিগোডেনড্রোসাইট
- এপেনডাইমাল কোষ
- মাইক্রোগ্লিয়া
উদাহরণ: মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকান্ড স্নায়ুকলা দিয়ে গঠিত।